বদনজর মানুষকে কবর পর্যন্ত পৌঁছে দেয়!

বদনজর সত্য, লাগলে লেগেও লাগে না কিছু খেয়াল, সেটা হলো বদনজর! হ্যাঁ, ইসলামী শরীয়তে বদনজরকে একটি প্রমাণিত সত্য হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা মানুষের জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। এটি নিছকই একটি কুসংস্কার নয়, বরং রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর একাধিক বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা এর বাস্তবতা স্বীকৃত। এমনকি বদনজরের প্রভাব এতটাই ভয়াবহ হতে পারে যে, এটি একজন সুস্থ ও সতেজ মানুষকে নিদারুণ অসুস্থ করে তুলতে পারে, তার জীবনযাত্রায় অপ্রত্যাশিত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটি মানুষকে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে, যেমনটি হাদিসে এসেছে: “বদনজর (মানুষকে) কবর পর্যন্ত এবং উটকে ডেকচি পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেয়।” (সহীহ মুসলিম, মুসনাদ আহমাদ – ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত)।

বদনজর মূলত অন্যের প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ দৃষ্টি, প্রশংসা বা বিস্ময়ের ফল, যা নেতিবাচক শক্তি বহন করে। যখন কোনো ব্যক্তি হিংসা, বিস্ময় বা অপ্রীতিকর মনোভাব নিয়ে তাকায়, তখন সেই দৃষ্টির নেতিবাচক প্রভাব অন্যের উপর পড়তে পারে, এমনকি যদি দৃষ্টিদানকারী নিজেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ক্ষতি করতে না চায়। এই অদৃশ্য শক্তি ব্যক্তি, পরিবার, স্বাস্থ্য, সম্পদ বা সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলে সুখ ও সমৃদ্ধি কেড়ে নিতে পারে। এর শিকার ব্যক্তি প্রায়শই বুঝতে পারে না তার সমস্যার প্রকৃত কারণ কী।

কীভাবে বদনজরের ভয়াবহ প্রভাব থেকে বাঁচবেন? বদনজর থেকে সুরক্ষা ও আরোগ্য লাভের জন্য আল্লাহ তা’আলা সহজ পথ বাতলে দিয়েছেন। আমাদের বিশ্বাস এবং সঠিক ইসলামিক আমলই এই অদৃশ্য ক্ষতির বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রাচীর হিসেবে কাজ করে:

  • আল্লাহর আশ্রয় চাওয়া: প্রতিদিনের সকল দু’আ, যিকির এবং ইবাদতে আল্লাহর কাছে শয়তান ও বদনজরের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা। যেমন, সকাল-সন্ধ্যার দু’আ এবং ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি পাঠ করা।
  • কুরআন তিলাওয়াত ও আমল: সূরা ফালাক, সূরা নাস, এবং সূরা ইখলাস নিয়মিত পাঠ করা। সূরা বাকারা তিলাওয়াত ঘরে বরকত আনে এবং শয়তান ও বদনজর থেকে সুরক্ষা দেয়।
  • আল্লাহর বরকত কামনা: কারো কোনো ভালো জিনিস বা উন্নতি দেখলে ‘মাশাআল্লাহ’, ‘বারাকাল্লাহু ফিক’ বা ‘আল্লাহুম্মা বারিক’ বলা। এটি অন্যের প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ দৃষ্টির প্রভাবকে নিষ্ক্রিয় করতে সাহায্য করে।
  • শরীয়াহসম্মত রুকইয়াহ: বদনজরের লক্ষণ বা প্রভাব অনুভব করলে অভিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত রাক্বীর মাধ্যমে শরীয়াহসম্মত রুকইয়াহ গ্রহণ করা। এটি আল্লাহর কালামের মাধ্যমে সরাসরি নিরাময়ের পথ।
  • পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা: শরীর, পোশাক, মন ও পরিবেশকে সর্বদা পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রাখা।

মনে রাখবেন, বদনজর থেকে সুরক্ষা কেবল আল্লাহর সাহায্যেই সম্ভব। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, সঠিক আমল এবং সুন্নাহর অনুসরণই এই অদৃশ্য অনিষ্ট থেকে বেঁচে থাকার সবচেয়ে কার্যকরী উপায়। সোল হিলিং আপনার বদনজরের সমস্যা চিহ্নিতকরণ এবং এর থেকে মুক্তির জন্য কুরআন-ভিত্তিক রুকইয়াহ সেবা প্রদানে অঙ্গীকারবদ্ধ।

রাসূল (সাঃ)- এর নির্দিশিত চিকিৎসা পদ্ধিতির আলোকে জিন, জাদু, বদনজর, হাসাদ জনিত সমস্যা এবং সকল প্রকার শারীরিক – মানষিক রোগের চিকিৎসা করা হয়।